মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০১:৫৪ পূর্বাহ্ন
সংবাদ নারায়ণগঞ্জ:- মাদারীপুরের শিবচরে মোবাইলে লুডু খেলা নিয়ে বকা দেওয়ায় আট বছরের এক শিশুকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় আহত হয়েছে আরো এক শিশু।
নিহতের নাম রতন মোল্লা। সে শিবচর কাদিরপুর ইউনিয়নের তাহের আকনের চরকান্দি গ্রামের জসিম মোল্লার ছেলে। আহত ৯ বছর বয়সী সোহান একই গ্রামের নাসির শিকদারের ছেলে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত ১৯ বছর বয়সী মেহেদী হাসান কায়েসকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সে শিবচর উপজেলার দ্বিতীয়খণ্ড ইউনিয়নের কাচাই মাতবরের কান্দি গ্রামের বিদ্যুৎ মিয়ার ছেলে।
জানা গেছে, দেড় মাস আগে চরকান্দি গ্রামে নানা আনসু ব্যাপারীর বাড়িতে বেড়াতে আসে মেহেদী। এরপর পার্শ্ববর্তী রতন ও সোহানের সঙ্গে মোবাইলে গেম খেলত সে। মঙ্গলবার সকালে সোহানের মায়ের মোবাইলে আবারো তিনজন মিলে লুডু খেলে। এ সময় মেহেদীকে বকা দেয় রতন ও সোহান। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শিশু দুটিকে হত্যার পরিকল্পনা করে মেহেদী।
পরিকল্পনা অনুযায়ী একইদিন বিকেলে ঘোরানো ও নতুন রেস্টুরেন্টে খাওয়ানোর কথা বলে পদ্মা সেতুর অ্যাপ্রোচ সড়ক সংলগ্ন নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে সোহানকে পানি ও চানাচুর আনার জন্য ১শ’ টাকা দিয়ে দোকানে যেতে বলে। খাবার আনতে চলে যায় সোহান। ততক্ষণে সন্ধ্যা নামে। সোহান যেতেই রতনকে নির্জন স্থানে শ্বাসরোধে হত্যা করে মেহেদী। প্রায় ২০ মিনিট পর সোহান এসে রতন কোথায় জানতে চায়। রতন বাড়ি চলে গেছে বলে জানায় মেহেদী। এ কথা বলে সোহানকে নিয়ে বাংলাবাজার ঘাট এলাকায় যায় সে। সেখানে নিয়ে সোহানকেও শ্বাসরোধে হত্যাচেষ্টা করে। কিন্তু তার চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে নানা বাড়ি পালিয়ে যায় মেহেদী। পরে স্থানীয়রা সোহানকে উদ্ধার করে।
নানা বাড়িতে পরিবারের লোকজন মেহেদীর সারা শরীরে কাদামাখা দেখে রতন ও সোহানের খোঁজ চান স্বজনরা। কৌশলে মেহেদী বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইলে স্বজনরা শিবচর থানায় খবর দেয়।
এরপর এএসপি আনিসুর রহমান, ওসি মিরাজ হোসেন, ওসি (তদন্ত) আমির সেরনিয়াবাতসহ পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে মেহেদীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে সে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করে রতনের লাশ দেখিয়ে দেয়। এতে বের হয় হত্যার পৈশাচিকতা। উদ্ধার করা হয় মোবাইল ফোনটিও। বুধবার মধ্যরাতে লাশ উদ্ধার করে থানায় নেয় পুলিশ।
ঘাতক মেহেদী বলেন, মোবাইলে লুডু খেলার সময় তারা আমার বাবা-মাকে বকা দেয়। তাই তাদের আমি হত্যা করি।
শিবচর থানার ওসি মিরাজ হোসেন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোবাইলে লুডু খেলার সময় বকা দেওয়া নিয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।